বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘বাজেট হোক জীবন-জীবিকার’

  •    
  • ৩০ মে, ২০২১ ১৪:১০

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানেম মনে করে, করোনার প্রকোপ লাঘব করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আসছে বাজেটে মূল নিয়ামক হওয়া উচিত মানুষের জীবন ও জীবিকা। এজন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং কৃষি এ চার খাতে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

উচ্চ প্রবৃদ্ধির আত্মতুষ্টিতে নয় বরং আগামী বাজেটে জীবন-জীবিকা গুরুত্ব দেয়া উচিত। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা খাতগুলোর মতো জনসংশ্লিষ্ট খাতে সবোর্চ্চ বরাদ্দ এবং সেই বরাদ্দের অর্থ সঠিকভাবে বিতরণ বা ব্যবহার হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে নজরদারি রাখার আহ্বান জানিয়েছে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)।

করোনাকালীন সময়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির চালচিত্র তুলে ধরে আসছে বাজেটে করণীয় বিষয়ক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।

‘বাজেট ২০২১-২২: বাস্তবতা এবং প্রত্যাশা’ শীর্ষক রোববারের ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেমের গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। মূল আলোচক ছিলেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান।

করোনার প্রকোপ লাঘব করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আসছে বাজেটে মূল নিয়ামক হওয়া উচিত মানুষের জীবন ও জীবিকা। এজন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং কৃষি এ চার খাতে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ এ গবেষণাটির।

আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গে জানানো হয়, শুধু বরাদ্দ বাড়ালে হবে না, অর্থ ব্যবহারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। করোনার কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দরকার। দারিদ্র্য দূরীকরণ, বৈষম্য নিরসন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

মূল প্রবন্ধে সায়মা হক বিদিশা বলেন, এই মহামারিকালেও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। শুধু বরাদ্দ বাড়ালে হবে না, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ব্যয়ের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়াতে হবে।

শিক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে বৈষম্য বাড়ছে। গ্রামীণ দরিদ্র শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে। এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ‘অসম্ভব গুরুত্ব’ পাওয়া দরকার। শিক্ষা খাত সংস্কার জরুরি।

সায়মা হক আরও বলেন, নতুন করে অনেক মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে নেমে গেছে। কিন্তু আসছে বাজেটে তাদের জন্য তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই। ৪২ শতাংশ মানুষ বর্তমানে দরিদ্র। এসব মানুষকে সামনে আনতে হলে সরকারের প্রায় ৫ হাজার ১৩২ কোটি টাকা দরকার। বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্দ্বী, বিধবা ও সমাজে ঝরে যাওয়া মানুষকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তিনি জানান, শহরমুখী অনেক মানুষ দরিদ্র হয়ে গেছে। এসব মানুষের জন্য বরাদ্দ মাত্র ২ শতাংশ। এখানে নতুন করে ভাবার দরকার।

কৃষি খাত নিয়ে সায়মা হক বলেন, বরাবরের মতো এখাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কৃষির জন্য ঘোষিত পুনঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ৭০ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু ঋণ যাদের দরকার তারা পাচ্ছে কিনা সে বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।

আসছে বাজেটে কৃষি খাতকেও গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সানেম। ছবি: নিউজবাংলা

বাজেটে এ চারটি খাতকে বিশেষভাবে নজর দেয়ার আহ্বান জানান সায়মা হক। তার মতে, শুধু বরাদ্দ বাড়ালে হবে না, বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। অর্থ ব্যবহারে পরিবীক্ষণ ও মূল্যয়ন জরুরি। কোন কোন ক্ষেত্রে অর্থ ছাড় হয়েছে, কেন ছাড় হয়নি এ ধরনের মূল্যায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নে বিদ্যমান দুবর্লতা কমাতে সংস্কার কার্যক্রমও জারি রাখতে হবে।

সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় একটি নির্দিষ্ট ডাটাবেজ করার পরামর্শ দেন সায়মা হক। বলেন, শহরে দরিদ্রদের জন্য শুধু বরাদ্দ বাড়ালে হবে না, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বাস্তবায়নে বড়রা বেশি সুবিধা পাচ্ছে বলে জানান সায়মা হক। জানান, এখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা ঋণ কাঙ্ক্ষিত ঋণ পাচ্ছে না।

সেলিম রায়হান বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বন্ধ করতে হবে, এটি সংবিধান পরিপন্থি। কারণ, যতদিন সুযোগ থাকবে ততদিন কালো টাকা সাদা করবে।

‘প্রবৃদ্ধির ধুম্রজালে আমরা যেন মূল বিষয়গুলো ভুলে না যাই। প্রবৃদ্ধিকে রঙিন চশমা দিয়ে দেখা যাবে না। গত ৫০ বছরে দারিদ্র্য দূরীকরণে যে সাফল্য ছিল করোনায় সেটা অনকেটা নেমে গেছে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি একটি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে আনার দরকার।’

সেলিম রায়হান জানান, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ৮৫ ভাগের বেশি মানুষ কাজ করে। এজন্য বাজেটের তাদের ব্যাপারে সুস্পষ্ট পদক্ষপ দরকার। শহরের শ্রমবাজার নিয়েও কোনো পদক্ষেপ নেই।

তিনি বলেন, আসছে বাজেটে কেবল আয়-ব্যয়ের হিসাব জনগণের সামনে তুলে ধরা নয়, বরং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সুষ্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর