বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবারের বাজেট হওয়া উচিত করোনা পজিটিভ

  •    
  • ৩০ মে, ২০২১ ১১:০৪

আসন্ন বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা, বিনিয়োগ ও দ্রুত শিল্পায়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। সরকার আগামী বাজেটে করোনা অতিমারি থেকে উত্তরণে অগ্রাধিকারমূলক পদেক্ষেপ নেবে।

সময়ের দাবি ও বাস্তবতার নিরিখে জনপ্রত্যাশা বিবেচনায় আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটটি হওয়া উচিত করোনা পজিটিভ বাজেট।

করোনা পজিটিভ বাজেট না করতে পারলে দেশের অর্থনীতিও সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার প্রশ্নে চলমান সংকট উত্তরণের পথ মসৃণ হবে না।

যে বাজেটটি অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করতে যাচ্ছেন, তা হবে করোনাকালীন দ্বিতীয় বাজেট। করোনার তীব্র প্রকোপের মধ্যে চলতি অর্থবছরের বাজেটটি ঘোষণা করেন তিনি।

এখন চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আতঙ্কের খবর হচ্ছে, করোনার ভয়ংকর রূপ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ধরা পড়েছে মরণঘাতী ছত্রাক ব্ল্যাক ফাঙ্গাসও। সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরজুড়ে বাংলাদেশকে এর ক্ষয়ক্ষতি ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মোকাবিলা করতে হবে।

নতুন বাজেটের সম্ভ্যাব্য আকার, রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে বাস্তবতার আলোকে নির্ধারণ করা উচিত। বাজেটে এমন পদক্ষেপ থাকতে হবে, যাতে করে মন্দা অর্থনীতি ফের সচল হতে পারে।

আসন্ন বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা, বিনিয়োগ ও দ্রুত শিল্পায়নকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। সরকার আগামী বাজেটে করোনা অতিমারি থেকে উত্তরণে অগ্রাধিকারমূলক পদেক্ষেপ নেবে।

করোনার প্রথম ধাপে দেশের ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার শিল্পসহায়ক প্রণোদনার প্যাকেজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। একই সঙ্গে দুস্থ জনগণের সুরক্ষায় ব্যাপক আকারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি গ্রহণ করায় এর সুফল মিলেছে।

কিন্তু এখনও করোনার প্রকোপ কমেনি। প্রতিনিয়ত মানুষ এর বহুমাত্রিক নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করে চলেছে। এসব কারণে আশা করি করোনা প্রতিরোধে আগের মতো উত্তরণমূলক কর্মসূচি ও প্রণোদনা প্যাকেজ আসন্ন বাজেটেও অব্যাহত রাখবে সরকার।

সময়ের দাবি ও বাস্তবতাকে আগ্রাহ্য করলে দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণের পথ সরকারের জন্য মোটেই মসৃণ হবে না।

স্বাস্থ্য খাতকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে বাজেটে। বিশেষ করে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য খাত উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

এর বাইরে খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্ব দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে কৃষি খাতের উন্নয়ন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প খাতে প্রণোদনার পাশাপাশি কর নীতি সহায়তায় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

এ ছাড়া সারা দেশে নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন এবং প্রান্তিক মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক রাখতে উৎসাহমূলক প্রণোদনা কর্মসূচিও রাখা উচিত।

বেসরকারি খাত এখন নাজুক অবস্থায়। অনেক সময় ধরে ব্যাংকের টাকা বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না। আরেকটি বড় প্রতিবন্ধকতা ব্যবসার সহজীকরণ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। ব্যবসার শুরু করার খরচ প্রত্যাশা অনুযায়ী কমছে না।

নতুন বাজেটে এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি দেখতে চাই। এতে করে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ না করলে কর্মসংস্থান হবে না। আর কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারলে অর্থনীতির গতি ত্বরান্বিত হবে না। মানুষের জীবন-জীবিকা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে না।

আবার ভালো কোম্পানিও বিনিয়োগ না এলে বেশি কর্মসংস্থানও হবে না। তাই বিনিয়োগ সম্প্রসারণ ও কাজের সুযোগ বাড়াতে সরকারকে আগামী বাজেটের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি সহায়তা ও উৎসাহমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ে গত বছরের চেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রত্যাশিত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য পূরণ কঠিন হবে। তবে এটাও ঠিক সরকারকে রাজস্ব আয় বাড়াতেই হবে। তা না হলে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও জীবন-জীবিকা সচল রাখার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে।

আয়কর থেকে বেশি রাজস্ব আহরণের সম্ভাবনা কম। আমদানি পর্যায়ে শুল্ক আহরণও ভালো হবে না। থাকল মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। ফলে রাজস্ব আহরণে সরকারের সামনে ভ্যাটই একমাত্র ভরসা।

ভ্যাট এমন একটি পরোক্ষ কর ব্যবস্থা যেখানে করহার বাড়ালে সরাসরি কারও ওপর বেশি প্রভাব প্রভাব পড়বে না। কেননা পণ্য, সেবা, খাদ্য সবরাই প্রয়োজন।

সে ক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে ভ্যাট ধার্য করলে এবং বিলাসী কিছু পণ্যে ভ্যাটের হার বাড়ালে সরকারি আয়ের বড় একটি অংশ ভ্যাট থেকেই আসতে পারে।

তবে মনে রাখতে হবে চলমান ভ্যাট আদায় পদ্ধতিতে এখনও নানা ধরনের অসঙ্গতি ও জটিলতা রয়েছে।

আগামী অর্থবছর সরকারকে কাঙ্ক্ষিত আয় করতে হলে ভ্যাট আদায় পদ্ধতি আরও সহজ করতে হবে। এর বাইরে সার্বিক রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশন ও কৃচ্ছ্রতা সাধনের মাধ্যমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পারলে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব।

আবদুল মাতলুব আহমাদ: সাবেক সভাপতি, এফবিসিসিআই

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহ আলম খান

এ বিভাগের আরো খবর