পটুয়াখালীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এক চর জাহাজমারা। মানুষের আনোগোনা তেমন না থাকায় চাষবাসও কোনোদিন এখানে হয়নি। সেই জমিই এখন ছেয়ে গেছে সবুজে। পাতার মাঝে মাঝে দেখা যাচ্ছে তরতাজা তরমুজ।
এই চরের অবস্থান রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালী তরমুজ চাষের জন্য উপযোগী। আর এই জেলায় উৎপাদিত তরমুজের অর্ধেক পাওয়া যায় রাঙ্গাবালীতে। রাঙ্গাবালীর অধিকাংশ মানুষ তরমুজ চাষের সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত।
কৃষকরা জানান, পটুয়াখালীর কৃষি অনেকটাই আমন ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল। ডিসেম্বরে আমন ধান ঘরে তোলার পর জানুয়ারি থেকে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। এপ্রিল মাসে ক্ষেতের তরমুজ বাজারে বিক্রি শুরু হয়।
কিন্তু জাহাজমারা চরে অন্য কোনো ফসলের আবাদ করা হতো না। চরের এই পোড়ো জমিতে চাষিরা বেশি লাভের আশায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আগাম তরমুজের আবাদ শুরু করেন।
জাহাজনামা চরসহ একই উপজেলার কলাগাছিয়া চরেও বালুর মধ্যে আগাম তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন ভূমিহীন কৃষকরা। এই দুটি চরের প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে এ বছর আগাম তরমুজ চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।
ভরদুপুরে মাথার উপর জ্বলন্ত সূর্য, পায়ের নিচে গরম বালু। এর মধ্যেই জাহাজনামায় তরমুজ ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক ফারুক হোসেন।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত হাত-আষ্ট (সাত-আট) বছর মানষের জমিতে তরমুজের চাষ হরছি (করেছি)। ছিজন শ্যাষে আতে টাহা ত্যামন থাকতো না। হ্যারপর চিন্তা হরছি মোর নিজের যদি এট্টু জমি থাকতো হ্যারে (তাহলে) ভালো অইতো। দুইডা টাহা বেশি পাইতাম।’
আফসোস করে ফারুক বলেন, ‘কিন্তু তা মোর কপালে নাই। মুই (আমি) থাহি আবাসনে। ঊনিশ সালে এক বেডায় এইহানে (জাহাজনামা সৈকত) ঘুরতে আইছিল। হেই বেডায় মোরে কইছিল যে, এই বালিতে তরমুজ লাগাইলে ভালো অয়।’
চরের পাশে বেড়িবাঁধের ধারে সরকারি আবাসন প্রকল্প এলাকায় থাকেন ফারুক। তার উদ্যোগে উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে আবাসনে বসবাসকারীরা এই বালুচরে আগাম তরমুজের আবাদ শুরু করেন। প্রতিদিন তারা ভোরবেলা চরে আসেন। সারা দিন কাজ শেষে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরেন।
ফারুক বলেন, ‘গেলবার মোর তিন লাখ টাহা লাভ অইছিল কিন্তু এবার বৃষ্টি না অওয়ায় আর মিডা পানির অভাবে ফলন নিয়া মুই ট্যানশনে আছি।’
স্ত্রী হাসি বেগম আর সন্তান রুবেলকে নিয়ে ফারুক দিনভর পরিচর্যা করে যাচ্ছেন তার সাত একর জমিতে করা তরমুজের। অনাবাদি জমি হওয়ায় তরমুজ আবাদে খরচও অনেক কম হয়েছে।
এখন পর্যন্ত তার সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। বিক্রি করতে পেরেছেন ৩৭ হাজার টাকার তরমুজ।
মিঠাপানির তীব্র সংকটে চাষিরা
তরমুজচাষে প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণ মিঠাপানি। সেজন্য চাষিরা ডিসেম্বর থেকেই বালুচরের মধ্যে বড় বড় কূপ খনন করে সেখানে বৃষ্টির পানি জমা করেন। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুরোটা সময় তরমুজ গাছের গোঁড়ায় সেই মিঠাপানি দিতে হয়। এর ফলে গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং অল্প সময়ে গাছে তরমুজ ধরে।
কিন্তু এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ পানি সংগ্রহ করতে পারেননি চাষিরা। মিঠা পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে জাহাজমারা আর কলাগাছিয়া চরে। পানি সংকটে দুশ্চিন্তায় আছেন তরমুজ চাষিরা।
আবাসনে বসবাসকারী মোহন গাজী বলেন, ‘কুয়ায় যেডু (যতটুকু) পানি আছে হ্যাতে (তাতে) হাত-আষ্ট দিন যাইতে পারে। হ্যার মধ্যে সব তরমুজ ওঠবে না।’
মোহন গাজীর মতে, একদিকে সাগরের লোনা পানি, আরেকদিকে ঘের সেখানেও লবণ পানি। দুই পাশে লবণাক্ততার কারণে গাছগুলো মরে যাওয়া শুরু করেছে। যে কারণে এ বছর লোকসান গোনার আশঙ্কা করছেন তিনি।
পাঁচ একর জমিতে এবার মোহন তরমুজ চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত মাত্র ৪০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পেরেছেন।
সোমবার দুপুরে জাহাজমারা চরে চাষিদের সঙ্গে পরামর্শ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গাবালী উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, মিঠাপানির সংকট সরেজমিন পরিদর্শনেও পেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ওপর মহলের সঙ্গে আলাপ করে যাতে এখানকার চাষিরা পর্যাপ্ত মিঠাপানি পায় সে ব্যবস্থা করবেন।
তিনি আরও জানান, গত বছরের মতো এ বছরও জাহাজমারা চরের ৩০ জন চাষিকে বিনা মূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক দেয়া হয়েছে।
গাছের গোঁড়ায় দেয়ার জন্য কুয়া থেকে কলসিতে পানি নিচ্ছিলেন জুলেখা বেগম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই রৌদ্দের মধ্যে এত কষ্ট হইরা (কইরা) যদি দুডা টাহা না পাই হ্যারে মনডায় ক্যামন লাগে কন? আম্মেরা দোয়া হলেন (করেন) মোর ফসলডু য্যান ভালো দামে ব্যাচতে পারি।’
জুলেখার স্বামী ফেরদৌস প্যাদা জানান, ৩ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। সোয়া লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তরমুজ বিক্রির টাকা সমান সমান হয় কি না সন্দেহ।
অধিকাংশ কৃষকের দাবি, সরকার যদি এই সব এলাকায় সেচের ব্যবস্থার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে তাদের অভাব অনটন দূর হবে।
রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, একাধিক চর ও নৌপথে যোগাযোগ সহজলভ্য হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই উপজেলায় তরমুজ চাষ। এ বছর রাঙ্গাবালীতে ৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১০০ হেক্টর বেশি।
তিনি আরও জানান, চাষিদের জন্য প্রয়োজনীয় মিঠাপানি সরবরাহের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ হৃদয়েশ্বর দত্ত নিউজবাংলাকে বলেন, গত বছর জেলায় প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছিল। এতে প্রায় ৭৫০ কোটি টাকার তরমুজ উৎপাদন হয়।
এ বছর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার তরমুজ উৎপাদন হতে পারে বলে তিনি আশা করেন।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সৈকতে ভেসে এসেছে বিরল প্রজাতির ‘ইয়েলো-বেলিড সি স্নেক’।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোর্শেদ লিটন। আগের দিন বুধবার বিকেলে উপজেলার কমলার দিঘি সমুদ্র সৈকতে সাপটি দেখা যায়।
মাহবুব মোর্শেদ লিটন বলেন, ‘বুধবার বিকেলের দিকে তানিম নামে এক যুবক ঘুরতে যান উপজেলার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের কাজির বাজারের কমলার দিঘি সমুদ্র সৈকতে। ওই সময় তিনি সাপটি দেখতে পান। এরপর স্থানীয় কিছু লোকজনও সেখানে গিয়ে সাপটি দেখতে পান। আমি বিষয়টি স্থানীয় বনবিভাগকে জানিয়েছি। এরপর ওই সাপের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।’
উপকূলীয় বন বিভাগ নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। এটি একটি বিষধর সাপ। উভচর প্রাণী হিসেবে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ জলে ও স্থলে প্রায় সময় দেখা যায়। তবে এই প্রজাতির সাপ বিরল। এগুলো এই অঞ্চলে তেমন একটা দেখা যায় না। সাপটি সন্ধ্যার দিকে উপকূলে উঠে মানুষের আনাগোনা দেখে আবার সাগরে চলে যায়।’
চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে আব্দুল জব্বারের বলীখেলার ১১৫তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার হোমনার বাঘা শরীফ। প্রথমবারের মতো এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েই বাজিমাত করেছেন শরীফ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লার আরেক সন্তান রাশেদ বলীকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হন শরীফ।
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার বাসিন্দা ফরিদ স্থানীয়দের কাছে ‘বাঘা শরীফ’ নামে পরিচিত।
এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় এবারের আসরের বলীখেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আজম নাছির উদ্দিন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ৮৪ জন বলী প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
দুপুরে খেলা শুরুর আগেই দর্শকে পূর্ণ হয়ে যায় নগরীর লালদীঘি ময়দান। ঐতিহ্যবাহী এ খেলা দেখতে জড়ো হন হাজারো দর্শক। ঢোল-বাজনার তালে তালে আর করতালিতে তারা বলীদের সমর্থন জোগাতে থাকেন।
প্রায় ১১ মিনিট খেলার পর রাশেদ নিজ থেকেই পরাজয় শিকার করে শরীফের হাত তুলে ধরেন। ফলে রেফারি শরীফকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
এ সময় চ্যাম্পিয়ন ‘বাঘা শরীফ’ নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলী খেলায় অংশ না নিয়ে আমাকে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন।’
অন্যদিকে রানার্স আপ মো. রাশেদ বলেন, ‘আমি আগে বলীখেলায় অংশ নেইনি। আমাকে জব্বারের বলীখেলায় নিয়ে এসেছেন শরীফ ভাই। তিনি আমার সিনিয়র। তাই তাকে জয়ী করে দিয়েছি। চ্যাম্পিয়ন শরীফ ভাইয়ের জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমার জন্যেও দোয়া করবেন।’
খেলা শুরুর আগেই নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন শাহজালাল বলী ও রানার্স আপ তরিকুল ইসলাম জীবন বলী। বাঘা শরীফকে সুযোগ করে দিতেই নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেন বলে জানান তারা।
এবারের প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন খাগড়াছড়ির সৃজন চাকমা। চতুর্থ হয়েছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার রাসেল বলী।
প্রথম রাউন্ডের ৩৫ জন বিজয়ীর প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা করে পুরস্কার দেয়া হয়। রানার আপকে ২০ হাজার টাকা প্রাইজমানি ও একটি সম্মাননা স্মারক (ক্রেস্ট) দেয়া হয়। চ্যাম্পিয়ন পান ৩০ হাজার টাকা প্রাইজমানি ও একটি ক্রেস্ট।
খেলা শেষে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয় আব্দুল জব্বার সওদাগর চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘী মাঠে আয়োজন করেন কুস্তি প্রতিযোগিতা। পরবর্তীতে সেটি আব্দুল জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিত হয়। এর জনপ্রিয়তা এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ মাসের ১২ তারিখে লালদিঘীর ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় এই খেলা। খেলার আগের দিন থেকে শুরু করে পরদিন পর্যন্ত তিন ধরে লালদিঘীর মাঠ ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটার জায়গাজুড়ে বসে বৈশাখী মেলা।
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকেই উচ্চ তাপমাত্রায় আলোচনায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা। মৃদু, মাঝারি, তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা দেখছে জেলাবাসী। মাঝে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও ফের অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের পশ্চিমের এই জেলা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মানে জেলায় আবারও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে এই জেলা।
আগের দিন বুধবারও এখানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ওইদিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন তাপমাত্রা নেমেছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই তীব্র তাপপ্রবাহ বৃহস্পতিবার এসে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
জেলা জুড়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। স্বস্তি মিলছে না কোথাও। তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে দিনের অধিকাংশ সময় মানুষ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে।
গরমের প্রভাবে বাড়ছে রোগবালাই। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে পারছে না। নষ্ট হচ্ছে ধান, কলা, আম, লিচুসহ মৌসুমী ফসল।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক হান্নান আলী বলেন, ‘এই তাপে মাটে উঠতি ফসল নষ্ট হয়ি যাচ্চি। আর রোদির তাতে মাটে দাঁড়ানু যাচ্চি না। ধানের ক্ষেতে বেশি সেচ লাগচি। তাও আবার দিনের বেলায় পাম্পে পানি উটচি না। রাতি দিতি হচ্চি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়েছে। জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ রূপ নিয়েছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে। সহসা বৃষ্টি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই। চলতি এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
মন্তব্য